হিন্দু ধর্মের জানা অজানা

লেখকের কথাঃ
Pijush Nag
Pijush Nag

প্রিয় পাঠক, আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। আমার এই ব্লগটি সম্পূর্ণ সনাতন (হিন্দু) ধর্ম নিয়ে ব্লগ ওয়েব সাইট। বিশ্বে অনেক ভাষাতে হিন্দু ধর্মের উপর সাইট থাকলেও বাংলা ভাষাতে একেবারেই অল্প। কিছু ওয়েবসাইট আবার বন্ধও হয়ে গেছে। তাই বাংলা ভাষায় হিন্দু ধর্মের মহিমা প্রচারের জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। এই ব্লগে সকল লেখা  হিন্দু ধর্ম নিয়ে এবং এই ব্লগের প্রধান উদ্দেশ্য হিন্দু ধর্মের প্রকৃত রূপ সবার মাঝে তুলে ধরা। কারো বা কোন ধর্মকে ছোট করে তুলে ধরা আমার কাম্য নয়। আমার এই আর্টিকেল পড়ে সনাতনী (হিন্দু) ভাই/বোনেরা হিন্দু ধর্ম (সনাতন ধর্ম ) সম্পর্কে  বিশেষ জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। এই আর্টিকেলে সনাতনী ভাই/বোনদের হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন শাস্ত্র সম্পর্কে প্রকৃত ধারনা দেওয়াই আমার মূল উদ্দেশ্য।  আমার লেখনি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন।

________________________পিযুষ নাগ, 
মোবাইল-01811-181318, 01812-181318

ভূমিকাঃ
ধর্ম শব্দটি সংস্কৃত “ধৃ” শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ দৃঢ়ভাবে ধারণ করা বা আশ্রয় প্রদান করা। [5] সনাতন শব্দের অর্থ চিরন্তন। সনাতন ধর্মের অর্থ ‘চিরন্তন ধর্ম’ বা ‘চিরন্তন পন্থা’ যা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে। এটি দ্বারা 'শাশ্বত ধর্ম, বা শাশ্বত আদেশ বুঝায়। কথিত আছে, সনাতন ধর্মের অর্থ স=সত্য, ন=ন্যায়, আ=আধ্যাত্মিক, ত=ত্যাগ, ন=নিষ্ঠা। এই পঞ্চতন্ত্র (সত্য, ন্যায়, আধ্যাত্মিক, ত্যাগ, নিষ্ঠা) দিয়ে তৈরি সনাতন ধর্ম। হিন্দুদের আদি পিতার নাম মনু ও মাতার নাম শতরূপা। 

মহাভারতঃ
মহর্ষি ব্যাসদেব (কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস) মহাভারত রচনা করেন। মহাভারত শব্দের অর্থ 'ভরত বংশের মহান উপাখ্যান।' মহাভারতে ১৮ টি পর্ব ও ১,০০,০০০ শ্লোক রয়েছে। [1]

মহাভারতের ১৮টি পর্বঃ
আদি পর্ব, সভা পর্ব, বন পর্ব, বিরাট পর্ব, উদ্যোগ পর্ব, ভীষ্ম পর্ব, দ্রোণ পর্ব, কর্ণ পর্ব, শল্য পর্ব, সৌপ্তিক পর্ব, স্ত্রী পর্ব, শান্তি পর্ব, অনুশাসন পর্ব, অশ্বমেধিক পর্ব,আশ্রমবাসিক পর্ব, মৌসল পর্ব, মহাপ্রস্থানিক পর্ব এবং স্বর্গারোহণ পর্ব।

মহাভারতের প্রধান ১৮ চরিত্রঃ- 
শ্রীকৃষ্ণ, ধৃতরাষ্ট্র, ভীষ্ম, দ্রোণ, কৃপাচার্য, শকুনি, দুর্যোধন, দুঃশাসন, কর্ণ, অশ্বত্থামা, কৃতবর্মা, যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল, সহদেব, দ্রৌপদী এবং বিদুর।

দ্রোপদীর স্বামী ৫ জনঃ
যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন,নকুল ও সহদেব।(2)

দ্রোপদী সন্তান-সন্ততি-৭জন
১. প্রতিবিন্ধ্য (যুধিষ্ঠির-পুত্র),  
২. সুতসোম (ভীম-পুত্র), 
৩. শ্রুতকর্মা (অর্জুন-পুত্র), 
৪. শতানীক (নকুল-পুত্র), 
৫. শ্রুতসেন (সহদেব-পুত্র),
৬. সূতনু (যুধিষ্ঠির কন্যা),
৭. প্রগতি (অর্জুন কন্যা)।(2)

শ্রীমদ্ভাগবতগীতাঃ
মহর্ষি ব্যাসদেব (কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা রচনা করেন। এটি মহাভারতের ৬ষ্ঠ পর্ব বা ভীষ্মপর্বের (২৩ - ৪০ অধ্যায়) অর্ন্তগত । এটি ৭০০টি শ্লোক নিয়ে ১৮টি অধ্যায়ে বিভক্ত।[3]

গীতার ১৮ টি অধ্যায় তিন ভাগে বিভক্তঃ
১. কর্ম ষটক (১-৬ অধ্যায়)
২. ভক্তি ষটক (৭-১২ অধ্যায়)
৩. জ্ঞান ষটক (১৩-১৮ অধ্যায়)

অধ্যায়অধ্যায়ের নামশ্লোক
অর্জুন বিষাদ যোগ৪৭
সাংখ্য যোগ৭২
কর্ম যোগ৪৩
জ্ঞান-কর্ম-সন্ন্যাস যোগ৪২
কর্ম-সন্ন্যাস যোগ২৯
আত্ম-সংযম যোগ৪৭
জ্ঞান-বিজ্ঞান যোগ৩০
অক্ষর-পরব্রহ্ম যোগ২৮
রাজ-বিদ্যা-রাজ-গুহ্য যোগ৩৪
১০বিভূতি যোগ৪২
১১বিশ্বরূপ-দর্শন যোগ৫৫
১২ভক্তি যোগ২০
১৩ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ-বিভাগ যোগ৩৪
১৪গুণত্রয়-বিভাগ যোগ২৭
১৫পুরুষোত্তম যোগ২০
১৬দৈবাসুর-সম্পদ-বিভাগ যোগ২৪
১৭শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ যোগ২৮
১৮মোক্ষ-সন্ন্যাস যোগ৭৮
সর্বমোট৭০০

শ্রীমদভগবদগীতার শ্লোক সংখ্যা: ৫৭৪ (শ্রীকৃষ্ণ) + ৮৫ (অর্জুন) + ১ (ধৃতরাষ্ট্র) + ৪০ (সঞ্জয়) = মোট ৭০০টি।

গীতার ১৮টি নামঃ 
(১) গঙ্গা (২) গীতা (৩) সাবিত্রী (৪) সীতা (৫) সত্যা (৬) পতিব্রতা (৭) ব্রহ্মাবলী (৮) ব্রহ্মবিদ্যা (৯) ত্রিসন্ধ্যা (১০) মুক্তিগেহিনী (১১) অর্ধমাত্রা (১২) চিতানন্দা (১৩) ভবঘ্নী (১৪) ভ্রান্তিনাশিনী (১৫) বেদত্রয়ী (১৬) পরানন্দা (১৭) তত্ত্বার্থ (১৮) জ্ঞানমঞ্জুরী। [7]

গীতার ছন্দঃ
গীতা অনুষ্টুপ ছন্দে রচিত। তবে এর মধ্যে কিছু ত্রিষ্টুপ ছন্দ রয়েছে। অনুষ্টুপ ছন্দের শ্লোক সংখ্যা ৬৪৫ টি এবং ত্রিষ্টুপ ছন্দের শ্লোক সংখ্যা ৫৫ টি। অনুষ্টুপ ছন্দ ৩২ অক্ষর বিশিষ্ট এবং ত্রিষ্টুপ ছন্দ ৪৪ অক্ষর বিশিষ্ট।

রামায়ণঃ

আদিকবি ঋষি বাল্মীকি মুনি ত্রেতা যুগের কাহিনি অবলম্বনে রামায়ণ রচনা করেন। রামায়ণে ৭টি কান্ড/ পর্ব ও ৫০০ টি সর্গ এবং ২৪০০০ শ্লোক রয়েছে। রামায়ণের শ্লোকগুলি ৩২ অক্ষরযুক্ত অনুষ্টুপ ছন্দে রচিত। ৭টি পর্ব হলঃ
১.আদিকাণ্ড/বালকাণ্ড
২.অযোধ্যাকাণ্ড
৩.অরণ্যকাণ্ড
৪.কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড
৫. সুন্দরকাণ্ড
৬.লঙ্কাকাণ্ড বা যুদ্ধকাণ্ড
৭. উত্তরকাণ্ড

‌‌★রাজা দশরথের তিন স্ত্রীঃ কৌশল্যা, কৈকেয়ী ও সুমিত্রা।
★রাজা দশরথের চারটি পুত্র ও এক কণ্যাঃ রাম, লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন এবং কন্যা-শান্তা । 
★রামের দুই পুত্রঃ লব ও কুশ। 
★রাবণেরা তিন ভাই রাবন,কুম্ভকর্ণ ও বিভীষণ।

বিঃদ্রঃ ৭ম কান্ড (উত্তরকান্ড) নিয়ে বিভিন্ন প্রকার মতভেদ  আছে ও কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করেন। কারো কারো মতে রামায়ণ ৬ টি কান্ডেই সমাপ্তি ঘটে, ৭ম কান্ড পরে সংযোজিত হয়েছে।[6]

রামায়ণের প্রধান কয়েকটি চরিত্রঃ

বাল্মিকী, জনক রাজা, দশরথ, কৈকেয়ী, কৌশল্যা, সুমিত্রা, রাম, লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন, সীতা, লব, কুশ, রাবণ, কুম্ভকর্ণ,সুগ্রীব, বালী, বিভিষন, বিশ্বামিত্র, মারীচ, শূর্পনখা, জটায়ু, জাম্বুবান, হনুমান ইত্যাদি। 

চণ্ডী/দুর্গা সপ্তশতী

শ্রী শ্রী চন্ডী মার্কন্ডেয়পুরাণের (৮১-৯৩ অধ্যায়) অন্তর্গত। মার্কন্ডেয় পুরাণে এই নাম দেবী মাহাত্ম্য। চন্ডীতে শ্লোকসংখ্যা ৫৭৮ টি এবং মন্ত্র সংখ্যা ৭০০ টি। চন্ডীর অপর নাম উগ্রা/ক্রদ্ধা। দুর্গা পুজায় চন্ডী পাঠ বাধ্যতামুলক।

বেদঃ

হিন্দুদের আদি ধর্মগ্রন্থ বেদ। বেদ শব্দটি সংস্কৃত: “বিদ্” ধাতু থেকে নিষ্পন্ন ( বিদ্ + অচ = বেদ) বিদ্ ধাতুর অর্থ জানা। তাই বেদ অর্থ জ্ঞান বা পরমবিদ্যা।

বেদের প্রকারভেদঃ বেদ চার প্রকার। যথা-(১) ঋকবেদ (২) সামবেদ (৩) যজুর্বেদ (৪) অথর্ববেদ ।

প্রতিটি ভাগকে আবার চার স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। স্তরগুলি হচ্ছে- (১) সংহিতা (২) ব্রাহ্মণ (৩) আরণ্যক (৪) উপনিষদ। 

বেদে মোট মন্ত্র সংখ্যা ২০৩৭৯ টি। 

১. ঋকবেদে মোট ১০ টি মন্ডল (খন্ড), ১০২৮ টি সূক্ত (স্তোত্র) ও ১০,৫৫২ টি ‘ঋক’ (মন্ত্র) রয়েছে। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ - ১১০০ অব্দে ঋকবেদ সংকলিত হয়েছে। 

২. যজুর্বেদে মোট ১,৯৭৫ টি মন্ত্র রয়েছে। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ - ৮০০ অব্দে যজুর্বেদ সংকলিত হয়েছে । 

৩. সামবেদে ১,৮৭৫ টি মন্ত্র রয়েছে। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ - ৮০০ অব্দে সামবেদ সংকলিত হয়েছে। 

৪. অথর্ববেদে মোট ২০টি কান্ড, ------টি সূক্ত ও  ৫৯৭৭টি মন্ত্র আছে। খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ - ৮০০ অব্দে অথর্ববেদ সংকলিত হয়।

উপবেদ ৪ টি. 
১. আয়ুর্বেদ. ২.ধনুর্বেদ. ৩.গন্ধর্ববেদ. ৪.অর্থশাস্ত্র. 
বেদাঙ্গ -৬ টি. 
১.শিক্ষা- পাণিনী 
২.কল্প- বিভিন্ন ঋষি সম্প্রদায় 
৩.ব্যাকরণ- পাণিনী. 
৪.নিরুক্ত- যাস্ক. 
৫.ছন্দ- পিঙ্গলাচার্য. 
৬.জ্যোতিষ- গর্ণ.

বেদের উপাঙ্গ-৪ টি.
১.পুরাণ. ২.মীমাংসা. ৩.ন্যায়. ৪.ধর্মশাস্ত্র

বেদের জ্ঞানকাণ্ড- ২ টি.
১.আরণ্যক. ২.উপনিষদ.

আরণ্যক - ৪ টি. ১.ঐতেরেয়. ২.কৌষীতকী ৩.শতপথ ব্রাহ্মণ. ৪.ছান্দোগ্য.

উপনিষদ -১২ টি.
১.বৃহদারণ্যক মন্ত্র- ৪৩৫.
২.ছান্দোগ্য মন্ত্র- ৬৬৮
৩.তৈত্তিরীয় মন্ত্র- ৬৮.
৪.ঐতরেয় মন্দ্র- ৩৩
৫.ঈশোপনিষদ মন্ত্র- ১৮
৬.কেন উপনিষদ- ৩৫
৭.কঠো উপনিষদ- ১১৯.
৮.প্রশ্ন উপনিষদ- ৬৭
৯.মুণ্ডকোপনিষদ- ৬৫.
১০.মাণ্ডুক্যউপনিষদ- ১২
১১.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ. মন্ত্র. - ১১৩.
১২.কৌষীতকী উপনিষদ মন্ত্র. - ৪৯.

ষড় দর্শন -৬ টি.
১.সাংখ্যা দর্শন - মহর্ষি কপিল.
২.যোগ দর্শন- পাতঞ্জলি.
৩.ন্যায় দর্শন - গৌতম.
৪.বৈশেষিক দর্শন-কণাদ.
৫.পূর্ব মীমাংসা - জৈমিনী.
৬.উত্তর মীমাংসা বেদান্ত দর্শন- ব্যাসদেব.

#মীমাংসা - ২ টি.
১.কর্ম মীমাংসা ২.ব্রহ্ম মীমাংস বা ব্রহ্মসূত্র.

স্মৃতি_সংহিতা(সমাজ ব্যবস্থাপক শাস্ত্র) ২০টি
১.মনু সংহিতা
২.অত্রি সংহিতা.
৩.বিষ্ণু সংহিতা.
৪.হরিত সংহিতা.
৫.যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা.
৬.পরাশর সংহিতা.
৭.ব্যাস সংহিতা.
৮.উশনা সংহিতা.
৯.অঙ্গিরা সংহিতা.
১০.যম সংহিতা.
১১.অপস্তম্ভ সংহিতা
১২.সম্বর্ত সংহিতা.
১৩.কাত্যায়ন সংহিতা.
১৪.বৃহস্পতি সংহিতা.
১৫.শঙ্খ সংহিতা
১৬.লিখিত সংহিতা.
১৭.দক্ষ সংহিতা.
১৮.গৌতম সংহিতা.
১৯.শতাতপ সংহিতা.
২০.বশিষ্ট সংহিতা.

পুরাণঃ

হিন্দু ধর্মের যে সকল গ্রন্থে সৃষ্টি থেকে প্রলয় পর্যন্ত ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস, রাজন্যবর্গ, যোদ্ধৃবর্গ, ঋষি ও উপদেবতাগণের বংশবৃত্তান্ত এবং হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্ব, দর্শন ও ভূগোলতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে তাকে পুরান বলে।

পুরাণ - ২ প্রকারঃ.
১.মহাপুরাণ. ২.উপ-পুরাণ.

মহা_পুরাণ -১৮টি.
১.ব্রহ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখা-১০,০০০.
২.শিব পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
৩.পদ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫৫,০০০.
৪.বিষ্ণু পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৩,০০০.
৫.ভাগবত মহাপুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮,০০০.
৬.মার্কণ্ডেয় পুনাণ মন্ত্রসংখ্যা-৯,০০০.
৭.অগ্নি পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫,৪০০.
৮.ভবিষত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,৫০০.
৯.ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮ ,০০০.
১০.মৎস পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,০০০.
১১.লিঙ্গ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১১,০০০.
১২.বরাহ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
১৩.কুর্ম্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৭,০০০.
১৪.গরুড় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৯,০০০.
১৫.ব্রহ্মান্ড পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১২,০০০.
১৬.নারদীয় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৫,০০০
১৭.স্কন্ধ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৮১,১০১.
১৮.বামন পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১০,০০০.

উপ_পুরাণঃ

তেত্রিশ কোটি দেবতা

সংস্কৃতে কোটি শব্দের দুটি অর্থ, একটি হল 'প্রকার' এবং অপরটি হল 'কোটি' (Crore)। বেদে তেত্রিশ কোটি (সংস্কৃত: ত্রয়স্তিমাশতি কোটি) দেবতা বলতে বেদে তেত্রিশ রকমের দেবতার কথা বলা হয়েছে।

১. অষ্টবসুঃ অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরীক্ষ, আদিত্য, দ্যৌ, চন্দ্র এবং নক্ষত্র। (৮)

২. একাদশ রুদ্রঃ প্রাণ (নিঃশ্বাস), অপান(প্রশ্বাস), ব্যন, সমান, উদাম, নাগ, কুর্ম্ম, কৃকল, দেবদত্ত, ধনঞ্জয় এবং জীবাত্মা। (১১)

৩. দ্বাদশ আদিত্য হলেন বছরের বারো মাস। (১২)

৪. ইন্দ্র ও প্রজাপতি (২)

৮+১১+১২+২=৩৩, এই তেত্রিশ প্রকার দেবতাই তেত্রিশ কোটি দেবতা নামে পরিচিত।

১. বৈদিক দেবতাঃ
    ইন্দ্র, সূর্য, বায়ু, বরুণ, মিত্র, অদিতি, যম, সোম, সরস্বতী, পৃথিবী ও রুদ্র।
২. পৌরানিক দেবতাঃ
    বিষ্ণু, শিব, শ্রী বা লক্ষ্মী, পার্বতী বা দুর্গা, ব্রহ্মা, সরস্বতী
৩. লৌকিক দেবতাঃ
    শীতলা, চন্ডী, শনি, ষষ্ঠী, মনসা, দক্ষিণ রায়।

গোত্রঃ 

গোত্র শব্দটির অর্থ বংশ বা গোষ্ঠীকে বোঝায়। সনাতন ধর্মে প্রচলিত কয়েকটি গোত্রের নাম নিন্মরুপ-

০১. কাশ্যপ গোত্র, ০২. ভরদ্বাজ গোত্র, ০৩. বশিষ্ট গোত্র, ০৪. বৃহস্পতি গোত্র, ০৫. বিশ্বামিত্র গোত্র, ০৬. জামদগ্ন্য গোত্র, ০৭. শিব গোত্র, ০৮. মৌদগল্য গোত্র, ০৯. ভার্গব গোত্র, ১০. শান্ডিল্য গোত্র, ১১. আলম্ব্যায়ন গোত্র, ১২. ধনন্বন্তরি গোত্র, ১৩. পরাশর গোত্র, ১৪. সাবর্ণ গোত্র, ১৫. অত্রি গোত্র, ১৬. অগস্ত্য গোত্র, ১৭. কাত্যায়নী গোত্র, ১৮. গৌতম গোত্র, ১৯. ঘৃতকৌশিক গোত্র, ২০. নাগঋষি গোত্র, ২১. চান্দ্রায়ণ গোত্র, ২২. বাঘ্রঋষি গোত্র, ২৩. হোবিঋষি গোত্র ইত্যাদি। 

উপরে উল্লেখিত গোত্রগুলি বিভিন্ন ঋষিদের নাম থেকে এসেছে। একেকজন ঋষির বংশ পরম্পরা তাদের নামে এক একটি গোত্র হিসেবে পরিচিত লাভ করে। সে হিসেবে একই গোত্রের বংশীয়গণ পরস্পর ভাইবোন। 

গোস্বামী, চক্রবর্তী, মিশ্র, মৈত্র, বাগচী, ভাদুড়ী, শাস্ত্রী, আচার্য্য, নন্দী, অধিকারী, নাগ, ধর, দত্ত, দে, শীল/ শর্মা, নন্দী, মল্লিক, কুন্ডু, পোদ্দার, বসাক, সাহা, বণিক, সেন, লাহা, রাহা, দেব, দেবনাথ, নাথ, বৈষ্ণব, সোম, শিকদার, , কর, মিত্র, নন্দী, গুহ, বসু/বোস, ঘোষ, বিশ্বাস.............  ইত্যাদি হল নামের উপাধী। 

একই উপাধী বা টাইটেলের ভিন্ন গোত্র থাকতে পারে। টাইটেলের উপর নির্ভর করে গোত্র নির্বাচিত হয়না। গোত্র পূর্ব পুরুষ কর্তৃক নির্ধারিত। তবে গোত্রের ধারক ও বাহক সব সময় পুরুষ কর্তৃক হয়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন টাইটেলঃ

ভট্ট/ভট্টাচার্য্য, মুখোপাধ্যায়/মুখার্জী, বন্দ্যোপাধ্যায়/ব্যানার্জী, গঙ্গোপাধ্যায়/গাঙ্গুলী, চট্টোপাধ্যায়/চ্যাটার্জী, উপাধ্যায়, গোস্বামী, চক্রবর্তী, লাহিড়ী, মিশ্র, মৈত্র, বাগচী, সান্যাল, ভাদুড়ী, ঘোষাল, তেওয়ারি/ত্রিবেদী (পশ্চিমা), মৌলিক, কাঞ্জিলাল, শাস্ত্রী, আচার্য্য, পুততুন্ড, নন্দী, আচার্জী, অধিকারী।

নাগ, দাম, ধর, দত্ত, মন্ডল/মণ্ডল, দে, শীল/ শর্মা, নন্দী, মল্লিক, আঢ্য, কুন্ডু, পোদ্দার, বসাক, সাহা, বণিক, বড়াল, সেন, লাহা, রাহা, দেব, দেবনাথ, নাথ, বৈষ্ণব, সোম, শিকদার, চাকী, কর, মিত্র, নন্দী, গুহ, পাইন, বসু/বোস, ঘোষ, বিশ্বাস, মণ্ডল/মন্ডল, উকিল, মল্লিক,। 

পাল, ভঞ্জ, মজুমদার, সিংহ, মিত্র, সরকার, করণ, রায়, সুর, চন্দ, আইচ, দাস, ভদ্র, হালদার, বিশ্বাস, চৌধুরী, কবিরাজ, ওঝা, পুরকায়স্থ, তরফদার, আদক, সাঁতরা, ভৌমিক, প্রামাণিক, সরকার, মাইতি, জানা, বেরা, ধাড়া, গিরি, মান্না, দিন্দা, কারক, সামন্ত, হাজরা।

মুন্সী, চাকলাদার, তালুকদার, বাহাদুর, ঠাকুর, প্রধান, দস্তিদার, খাস্তগীর, সরকার, বর্ধন, মহলানবীশ, দেওয়ান।

ভক্ত, বাসফোর, মল্লবর্মণ, বর্মণ/বর্মা, মুচি/চর্মকার, ঘোষ, মোদক,দেববর্মা, হালদার, রাজবংশী।

কানুনগো, কারিগর, কর্মকার, ঘটক, গোঁসাই, পালাকার, ভাঁড়, শোলাকার, মালাকার/ মালী, ঘরামী, মিস্ত্রী, সূত্রধর/সুতার, পাঁটিকার, বাড়ৈ, হালদার, মাঝি, পাখাধরা, কার্য্যী, দেওরী, ওঝা, পটুয়া, পাটোয়ারি, ডাকুয়া, বৈদ্য।

হিন্দুধর্মের বর্ণ প্রথাঃ

হিন্দু সমাজের জাতি ভেদের উচু-নিচু স্তরটি বর্ণপ্রথা নামে পরিচিত। হিন্দু সমাজে চার প্রকারের বর্ণপ্রথা চালু ছিল। যথা- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, শুদ্র ও বৈশ্য। যেসব সম্প্রদায় চারটি বর্ণের অন্তর্গত তাদেরকে সবর্ণ হিন্দু বলা হত।

হিন্দু বিবাহঃ

শব্দের উৎপত্তিঃ বিবাহ শব্দটি বি-পূর্বক বহ্ ধাতু ও ঘঞ প্রত্যয়যোগে গঠিত৷ বহ্ ধাতুর অর্থ বহন করা এবং বি উপসর্গের অর্থ বিশেষরূপে ৷ সুতরাং বিবাহ শব্দের অর্থ বিশেষরূপে ভারবহন করা।

বিবাহের সঙ্ঘাঃ যৌবনে বেদ, পিতৃৃপূজা ও হোম প্রভৃৃৃৃতির মাধ্যমে মন্ত্রোচ্চারণপূর্বক বর ও বধূর মিলনরূপ সংস্কারকে বিবাহ বলা হয়।

বিবাহের প্রকারভেদঃ স্মৃতি শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থ মনুসংহিতায় আট প্রকার বিবাহের কথা বলা আছে। সেগুলো হল:- (১) ব্রাহ্ম বিবাহ (২) আর্য বিবাহ (৩) প্রাজাপত্য বিবাহ (৪) আসুর বিবাহ (৫) গান্ধর্ব বিবাহ (৬) রাক্ষস বিবাহ (৭) দৈব বিবাহ (৮) পৈশাচ বিবাহ।

বিবাহ পর্বঃ বিবাহ অনুষ্ঠানের অনেক পর্ব আছে৷ যেমন- আর্শীবাদ, অধিবাস, বৃৃৃৃদ্ধিশ্রাদ্ধ,গায়ে হলুদ (গাত্র হরিদ্রা), বর-বরণ, শুভদৃৃষ্টি, মালাবদল, সম্প্রদান, যজ্ঞানুষ্ঠান ও সাতপাকে বাঁধা ,সিঁথিতে বিবাহ চিহ্ন, সপ্তপদীগমন, বাসি বিয়ে, অষ্টমঙ্গলা প্রভৃৃৃৃতি।

বিবাহের মূল মন্ত্রঃ
“যদেতত্ হৃদয়ং তব, তদস্তু হৃদয়ং মম ।
যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব ।।”

সরলার্থঃ—তোমার এই হৃদয় আমার হোক আমার এইহৃদয় তোমার হোক।

সাত পাকে সাত প্রতিশ্রুতিঃ
১. প্রথম পাকে ভবিষ্যতের সন্তানদের যত্ন নেওয়ার অঙ্গীকার নেন।
২. দ্বিতীয় পাকে স্ত্রী-কে সমস্ত রকম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব নেন।
৩. তৃতীয় পাকে পরিবারে উন্নতির জন্য অর্থ উপার্জনের প্রতিশ্রুতি দেন।
৪. চতুর্থ পাকে পরিবারের কল্যাণের ভার স্ত্রীর হতে অর্পন করেন।
৫. পঞ্চম পাকে স্বামীর প্রতি বিশ্বাসের প্রতিশ্রুতি নেন।
৬. ষষ্ট পাকে নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস রাখার প্রতিশ্রুতি নেন।
৭. সপ্তম পাকে স্বামী ও স্ত্রী বন্ধু থাকার প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হন।


বিধবা বিবাহঃ

১৬ জুলাই, ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন, বর্ধমানের বাল্য বিধবা কালীমতীকে বিবাহ করে প্রথম "বিধবা বিবাহ" প্রচলন করেন। কলকাতায় রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে ২৪ শে অগ্রহায়ণ, ১২৬৩ বঙ্গাব্দ (৭ই ডিসেম্বর, ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ) এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, রমাপ্রসাদ রায়, নীলকমল মুখোপাধ্যায়, কালীপ্রসন্ন সিংহ, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামগোপাল ঘোষ প্রমুখ বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।

সতীদাহ প্রথাঃ 

সতীদাহ প্রথা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মাহুতি দেওয়ার এক করুণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন প্রথা।

রাজা রামমোহন রায় এই প্রথা বিলুপ্তির উদ্যোগ নেন। ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক ৪ ডিসেম্বর, ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথাকে আইন করে নিষিদ্ধ করেন।

রাশিফলঃ

বারোটি রাশিঃ
মেষ রাশি, বৃষ রাশি, মিথুন রাশি, কর্কট রাশি, সিংহ রাশি, কন্যা রাশি, তুলা রাশি, বৃশ্চিক রাশি, ধনু রাশি, মকর রাশি, কুম্ভ রাশি, মীন রাশি!

জন্ম তারিখ অনুযায়ী রাশিফল
মেষ রাশিঃ ২১ শে মার্চ – ২০ এপ্রিল
বৃষ রাশিঃ ২১ শে এপ্রিল – ২০ মে 
মিথুন রাশিঃ ২২ শে মে – ২১ শে জুন
কর্কট রাশিঃ ২২ জুন – ২২ জুলাই
সিংহ রাশিঃ ২৩ জুলাই – ২৩ আগস্ট
কন্যা রাশিঃ ২৪ আগস্ট – ২৩ সেপ্টেম্বর
তুলা রাশিঃ ২৪ সেপ্টেম্বর – ২৩ অক্টোবর
বৃশ্চিক রাশিঃ ২৪ অক্টোবর – ২২ নভেম্বর
ধনু রাশিঃ ২৩ নভেম্বর – ২১ ডিসেম্বর
মকর রাশিঃ ২২ ডিসেম্বর – ২০ জানুয়ারি
কুম্ভ রাশিঃ ২১ জানুয়ারি – ১৮ ফেব্রুয়ারি
মীন রাশিঃ ১৯ ফেব্রুয়ারি – ২০ মার্চ

সাতটি স্বর্গের নামঃ

১) মনুষ্যলোক ভূমি স্বর্গ ২) চতুর্মহারাজিক স্বর্গ ৩) তাবতিংস স্বর্গ ৪) যাম স্বর্গ ৫) তুষিত স্বর্গ ৬) নির্ম্মানরতি স্বর্গ ৭) পরনির্মিত বশবর্তি স্বর্গ

২৮ টি নরকের নামঃ 

রৌরব, শূকর, রোধা, তালা, ভিসাসনা, মহাজওয়ালা, তপ্তকুম্ভ, লাভানা, বিমোহন, রুধিরন্ধ, বৈতরণী, কৃমিসা, কৃমিভোজন, অসিপত্র বন, কৃষ্ণ, লালভক্ষ, দারুণা, পূয়োদ, বাবা, বাহনিজওয়ালা, আধোসিরাস, সান্দানসা, কালসূত্র, তামাস, আভিচি, স্বভোজন, অপ্রতিষ্ঠা ও আভিচি।

দশটি দিকঃ (১) পূর্ব (২) পশ্চিম (৩) উত্তর (৪) দক্ষিণ (৫) ঈশাণ (৬) অগ্নি (৭) নৈঋত (৮) বায়ু (৯) উর্দ্ধ (১০) অধঃ

পনেরো তারিখ: (১) প্রতিপদ (২) দ্বিতীয়া (৩) তৃতীয়া (৪) চতুর্থী (৫) পঞ্চমী (৬) ষষ্ঠী (৭) সপ্তমী (৮) অষ্টমী (৯) নবমী (১০) দশমী (১১) একাদশী (১২) দ্বাদশী (১৩) ত্রয়োদশী (১৪) চতুর্দশী (১৫) পূর্ণিমা/ অমাবস্যা!

চার যুগঃ
1) সত্যযুগ  2) ত্রেতাযুগ  3) দ্বাপরযুগ 4) কলিযুগ
দশাবতারঃ
মৎস্য অবতার, কূর্ম অবতার, বরাহ অবতার, নৃসিংহ অবতার, বামন অবতার, পরশুরাম অবতার, রাম অবতার, বলরাম অবতার, বুদ্ধ অবতার ও কল্কি অবতার।[4]

দশবিধ সংস্কারঃ

প্রাচীন ঋষিরা মানুষের জীবনকে সুন্দর ও কল্যাণময় করার জন্য বহু ধর্মীয় বিধি-বিধান ও মাঙ্গলিক কর্মের নির্ধারণ করেছেন, যা হিন্দু ধর্মের সংস্কার নামে পরিচিত। স্মৃতিশাস্ত্রে দশ প্রকার সংস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
হিন্দু ধর্মের দশবিধ সংস্কার গুলো হল-
(১) গর্ভাধান (২) পুংসবন (৩) সীমন্তোন্নয়ন (৪) জাতকর্ম (৫) নামকরণ (৬) অন্নপ্রাশন (৭) চূড়াকরণ (৮) উপনয়ন (৯) সমাবর্তন  (১০) বিবাহ।
দশবিধ সংস্কারকে আবার চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথাঃ
(ক) গর্ভ-সংস্কার → গর্ভাধান, পুংসবন ও সীমন্তোন্নয়ন
(খ) শৈশব-সংস্কার → জাতকর্ম, নামকরণ ও অন্নপ্রাশন
(গ) কৈশোর-সংস্কার → চূড়াকরণ, উপনয়ন ও সমাবর্তন
(ঘ) যৌবন-সংস্কার → বিবাহ।
পক্ষ দুটিঃ
(১) কৃষ্ণপক্ষ ২) শুক্লপক্ষ
ছয় ঋতু ও বারো মাসঃ

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত।

বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, মার্গশীর্ষ, পৌষ, মাঘ, ফাগুন! 

মৃত্যু সংবাদ শুনলেঃ

" ওঁ দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু "
☞সরলার্থ- তিনি দিব্যলোকে গমন করুক।

☞সংস্কৃত (স সঃ সা)

(স) হল উভয়লিঙ্গ, (সঃ) হল পুংলিঙ্গ, (সা) হল স্ত্রীলিঙ্গ 

তাই মৃত ব্যক্তিকে নারী পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবার উদ্দেশ্য বলতে হয়।" ওঁ দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু "

☞আসুন বেদে সেই মন্ত্রটি সম্পূর্ণ দেখি

“ওঁ কৃত্বা তু দুষ্কৃতং কর্মং জানতা বাপ্য জানতা ।
মৃত্যুকাল বশং প্রাপ্য নরং পঞ্চত্বমাগতম্
ধর্মাধর্ম সমাযুক্তং লোভ মোহ সমাবৃতম্
দহেয়ং সর্বগাত্রানি দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু”


অনুবাদঃ তিনি জেনে বা না জেনে অনেক দুষ্কর্ম করে থাকতে পারেন। কালবশে মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। এ দেহ ধর্ম, অধর্ম, লোভ, মোহ প্রভৃতি দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। হে অগ্নিদেব, আপনি তার সকল দেহ দগ্ধ করে দিব্যলোকে নিয়ে যান।


ভুল মন্ত্রঃওঁ দিব্যান লোকান স্ব গচ্ছতুঃ

স্ব অর্থ নিজে,তাহলে অর্থ হয়---

"দিব্যলোকে আমি গমন করি।"

সপিন্ডকরনঃ

যে সকল ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির আত্মার কল্যানের জন্য পিন্ডদানের অধিকারী এবং মৃত ব্যক্তি জীবিত থাকলে, তিনি যাদের মৃত্যুতে পিন্ডদানের অধিকারী হতেন, তাঁরা সকলেই পরস্পরের সপিন্ড।

হিন্দু (সনাতন ধর্মীয়) দায়ভাগ আইনানুযায়ী সপিন্ডগণের ক্রমিক তালিকা
০১। পূত্র
০২। পূত্রের পূত্র
০৩। পূত্রের পূত্রের পূত্র
০৪। স্ত্রী--- ক) পূত্রের স্ত্রী, খ) পূত্রের পূত্রের স্ত্রী ও গ) পূত্রের পূত্রের পূত্রের স্ত্রী।
০৫। কন্যা
০৬। কন্যার পূত্র
০৭। পিতা
০৮। মাতা
০৯। ভ্রাতা, সহোদর ভ্রাতা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতা।
১০। ভ্রাতুস্পূত্র, সহোদর ভ্রাতা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতার পূত্র।
১১। ভ্রাতুস্পূত্রের পূত্র, সহোদর ভ্রাতা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতার পূত্রের পূত্র।
১২। বোনের পূত্র
১৩। পিতার পিতা
১৪। পিতার মাতা
১৫। পিতার ভ্রাতা
১৬। পিতার ভ্রাতার পূত্র (খুড়াতো ভাই)
১৭। পিতার ভ্রাতার পূত্রের পূত্র
১৮। পিতার ভগ্নির পূত্র
১৯। পিতার পিতার পিতা
২০। পিতার মাতার পিতা
২১। পিতার পিতার ভ্রাতা (পিতার খুড়া)
২২। পিতার খুড়ার পূত্র
২৩। পিতার খুড়ার পূত্রের পূত্র
২৪। পিতার পিসির পূত্র
২৫। পূত্রের কন্যার পূত্র
২৬। পূত্রের পূত্রের কন্যার পূত্র
২৭। ভ্রাতার কন্যার পূত্র
২৮। ভ্রাতার কন্যার কন্যার পূত্র
২৯। খুড়ার কন্যার পূত্র
৩০। খুড়ার পূত্রের কন্যার পূত্র
৩১। পিতার খুড়ার কন্যার পূত্র
৩২। পিতার খুড়ার পূত্রের কন্যার পূত্র
৩৩। মাতার পিতা (আজা/নানা)
৩৪। মামা (মাতার ভ্রাতা)
৩৫। মামার পূত্র (মামাতো ভাই)
৩৬। মামার পূত্রের পূত্র (মামাতো ভাইয়ের পূত্র)
৩৭। মাসীর পূত্র (মাতার বোনের পূত্র)
৩৮। মাতার পিতার পিতা
৩৯। মাতার পিতার ভ্রাতা
৪০। মাতার পিতার ভ্রাতার পূত্র
৪১। মাতার পিতার ভ্রাতার পূত্রের পূত্র
৪২। মাতার পিতার বোনের পূত্র
৪৩। মাতার পিতার পিতার পিতা
৪৪। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতা
৪৫। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পূত্র
৪৬। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পূত্রের পূত্র
৪৭। মাতার পিতার পিতার বোনের পূত্র
৪৮। মাতার ভ্রাতার কন্যার পূত্র
৪৯। মাতার ভ্রাতার পূত্রের কন্যার পূত্র
৫০। মাতার পিতার ভ্রাতার কন্যার পূত্র
৫১। মাতার পিতার ভ্রাতার পূত্রের কন্যার পূত্র
৫২। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার কন্যার পূত্র
৫৩। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পূত্রের কন্যার পূত্র

দায়ভাগ আইন অনুযায়ী মোট সপিন্ডের সংখ্যা ৫৩ জন। তন্মধ্যে পুরুষ সপিন্ড ৪৮ জন ও মহিলা সপিন্ডের সংখ্যা ৫ জন।

নারী সপিন্ড যথাক্রমে ১) বিধবা স্ত্রী, ২) কন্যা, ৩) মাতা, ৪) পিতার মাতা ও ৫) পিতার পিতার মাতা। 

=================================

তথ্যসূত্রঃ

1. https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4

2. https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8C%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%80

3. https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BE#:~:text=%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%E0%A7%AD%E0%A7%A6%E0%A7%A6%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%95%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%20%E0%A7%A7%E0%A7%AE%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A5%A4

4. http://hindushastra2.blogspot.com/2019/01/blog-post_15.html

5. https://studybuddhism.com/bn/abasyaka/ki/dharma-ki

6. https://sonatongaan.blogspot.com/2017/08/blog-post_19.html?fbclid=IwAR0dAzORZuIuNpWiWWWMBDwiPaawXjVvZlvr6ECjkJIdAKMDsGKtPXxnYwM&m=1

7. https://dhak4.wordpress.com/2019/06/24/%e0%a6%97%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a7%a7%e0%a7%ae-%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%aa/

8.

9.

10.

11.

12.

=======================

বিঃদ্রঃ এই সাইটের এখনো পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয় নাই, কাজ চলতেছে। ভুলত্রুটিও সংশোধন করা হচ্ছে। দয়াকরে কেউ বিষয় টি খারাপ ভাবে নিবেন না। তথ্যসূত্র পরে সংযোজন করা হবে লিংক আকারে।















মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কীর্তনের গান সমগ্র (Pijush Nag)

রানার অকাল মৃত্যু